অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়েরকৃত মামলায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলাটি বিএনপি দায়ের করে, যেখানে আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী কারচুপির অভিযোগ এনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। মোট ২৪ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০০৯ সালে তৎকালীন সামরিক শাসকদের সহায়তায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবৈধভাবে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন। এরপর নির্বাচনী পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বাতিল করানো হয়।
২০১৪ সালে শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডারদের মাধ্যমে বিএনপি ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন, অপহরণ, গুম, হত্যা ও হামলা চালানো হয়।
২০১৭ সালে নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নুরুল হুদা সহ কমিশনাররা অবৈধ সরকারকে সুবিধা দেওয়ার জন্য সংবিধানের পরিপন্থী কাজ করে বিএনপি ও অন্যান্য দলকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোট কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল গড়ে তোলা হয়।
বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের নির্বাচন প্রচারণায় বাধা দেওয়া, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালানো হয়। নুরুল হুদা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিএনপি সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেন এবং এই কাজে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নুরুল হুদার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আবারও প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।